Thursday, 10 May 2018

নিজেদের জমি এ বার ই-নিলাম করবে পুরসভা

জমি নিলামে পরামর্শদাতা সংস্থার সাহায্য নয়। সরকারি ওয়েবসাইটে জমি সংক্রান্ত বিবরণ দিয়ে নিজেরাই তা নিলামে তুলতে চাইছে কলকাতা পুরসভা। ইতিমধ্যে পুরসভার শীর্ষ কর্তারা এ নিয়ে একাধিক বার বৈঠকে বসেছেন। পরামর্শদাতা সংস্থার জন্য টাকা খরচ না করে নিজেদের মতো করে ই-নিলামের প্রস্তুতি নেওয়া হবে বলে স্থির হয়েছে।
গত জানুয়ারিতেই শহরের ২৩ একর জমি নিলাম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পুরসভা। ৯৯ বছরের মেয়াদে জমিগুলি লিজে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। এর জন্য বিশেষজ্ঞ পরামর্শদাতা সংস্থার সাহায্য নেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল। 
বর্তমানে সেই সিদ্ধান্ত বদলে ফেলা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। পুর আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ওই কাজের জন্য পরামর্শদাতা সংস্থা দাবি করেছিল প্রায় দেড় কোটি টাকা, যা দিতে নারাজ পুরকর্তারা! এক পদস্থ আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘অত খরচ করে লাভ কী! আমরা নিজেরাই ই-নিলামের প্রস্তুতি নেব।’’
ই-নিলামে তোলার আগে নিয়ম মতো সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপনও দেওয়া হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। কী ভাবে নিলাম প্রক্রিয়া এগোনো হবে, তা নিয়ে আলোচনাও করেছেন পুরকর্তারা। প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারিতেই ই এম বাইপাস সংলগ্ন ১৩ একর, বি এল শাহ রোডে ৪ একর-সহ মোট ২৩ একর জমি ই-নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরকর্তাদের প্রাথমিক অনুমান, ওই জমি নিলামে তুলে ১,২০০ কোটি টাকা আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
যদিও জমি ই-নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্নও উঠেছে পুর প্রশাসনের অভ্যন্তরে। পুর আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, যে ভাবে সৌন্দর্যায়ন-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে বেহিসেবি খরচ করা হয়েছে, তাতে অর্থাভাবে পুর পরিষেবার অনেক কাজই ব্যাহত হতে বসেছে। ফলে, জরুরি ভিত্তিতে পুরসভার অর্থের প্রয়োজন। সে কারণেই প্রায় নিঃশেষিত জমির ভাণ্ডারের অবশিষ্ট জমিও নিলামে তুলতে বাধ্য হচ্ছে পুরসভা। প্রসঙ্গত, দু’বছর আগে প্রথম বার জমি নিলামের প্রস্তুতির সময় বাইপাস সংলগ্ন ১০ একর ও পাঁচ একরের দু’টি জমি নিলামে তোলার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু একাধিক বার জমিগুলি নিলামে তুললেও ক্রেতা পাওয়া যায়নি। 
পুর কর্তৃপক্ষের অবশ্য পাল্টা যুক্তি, দালালরা একজোট হয়ে শহরের জমি কিনছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার জমির দামই নিয়ন্ত্রণই শুধু নয়, অন্য কোনও ক্রেতা যাতে জমি কেনার প্রক্রিয়ার ভিতরে ঢুকতে না পারেন, তা-ও নিয়ন্ত্রণ করেছে তারা। ফলে জমির মূল্য বাবদ পুরসভার আর্থিক ক্ষতিই হয়েছে। কিন্তু ই-নিলাম হলে একজোট হয়ে জমি কেনার সুবিধা থাকবে না। তখন বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে যে কেউ এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এমনকী, কে কী দাম দিচ্ছেন, তাও দেখা বা জানার উপায় থাকবে না। পুরসভার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘ই-নিলামে জমি কেনাবেচার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আসবে। সেটাই করতে চাই।’’
Courtesy: :- anandabazar.com

No comments:

Post a Comment